শ্রমের মর্যাদা রচনা। শ্রমের মর্যাদা ২০ প্যারা। পূর্ণ মার্ক
আসসালামু আলাইকুম❤️
আমাদের আজকের বিষয় শ্রমের মর্যাদা রচনা। শ্রম ছাড়া কোন মানুষ কোন দিন সফল হতে পারেনি। পারবেও না।💚 তারপরও আমাদের সমাজ থেকে এই বিষয়টা একদমি উঠে গেছে। মানুষ এখন শ্রম বা কাজকে সম্মান করে না। এখন তারা কাজকে ভাগ করে ফেলছে। তারা শ্রমের বেধে শ্রমিকের মর্যাদা দেয়। এই বিষয় গুলো তুলে ধরার জন্যই শ্রমের মর্যাদা রচনাটি পড়তে হবে।
শ্রমের মর্যাদা রচনাটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
- সাধারণত শুধু মাত্র শ্রমের মর্যাদা রচনাটি না। সকল রচনায় কোন না কোন একটা ভালো দিক নির্দেশ করে। তবে শ্রমের মর্যাদা রচনাটি একটু হলেও বিশেষ। শুধু মাত্র পরিক্ষার জন্য না। শ্রমের মর্যাদা অনুচ্ছেদ। শ্রমের মর্যাদা অনুচ্ছেদটি সবাই একবারও হলেও পড়বেন। শ্রমের মর্যাদা রচনাটি আপনার চিন্তাধারাতে বদল আনতে পারবেন।
শ্রমের মর্যাদা রচনা ২০ প্যারা :-
অনেকেই শ্রমের মর্যাদা রচনা ২০ প্যারা বা তারও বেশি চায়। কিছু কিছু ওয়েব সাইটে ২০ প্যারা দেওয়া আছে। তবে বিস্তারিত বুঝানো নেই। তাই শ্রমের মর্যাদা রচনা ২০ প্যারা দিয়ে না বুঝার চেয়ে আমরা ১০ প্যারা দিলাম মন দিয়ে পড়লে এটুকুই যথেষ্ট।
যায়হোক, আশা করি রচনাটি সবার ভালো লাগবে।
এই প্রবন্ধ অনুসারে লিখা যায়ঃ-
- শ্রমের মর্যাদা
- শ্রমের মূল্য
- জাতীয় উন্নয়নে শ্রমের গুরুত্ব
- সভ্যতা বিকাশে শ্রমের অবদান
- পরিশ্রমের মর্যাদা
- কায়িক শ্রম
- জীবন ঘটনে শ্রমের গুরুত্ব
শ্রমের মর্যাদা
| প্রবন্ধ-সংকেত |
|---|
| ভূমিকা - |
| শ্রমের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা - |
| শ্রমের প্রকারভেদ - |
| ভাগ্যরচনা ও প্রতিভা বিকাশে শ্রম - |
| শ্রমিক লাঞ্ছনা - |
| সকল ধর্মে শ্রমের মর্যাদা - |
| শ্রমের জয় - |
| বাংলাদেশে শ্রমের স্থান - |
| শ্রমের সুফল - |
| উপসংহার - |
"বিশ্বপিতার মহা-কারবার এই দিন দুনিয়াটামানুষই তাহার মহামূল্যবান, কর্ম তাহার খাটা।"
-যতীন্দ্রমােহন বাগচী
শ্রমের গুরত্ব ও প্রয়ােজনীয়তাঃ মানবজীবনে শ্রমের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। ছোট হোক বড় হােক সকলেরই কাজের প্রয়ােজন আছে এবং যার যার দায়িত্ব যথাযথ পালনের মধ্যে জীবনের সুখকর অস্তিত্ব নির্ভরশীল। জীবন উন্নতির চাবিকাঠি পরিশ্রমের মধ্যে বিদ্যামান। শ্রমের এই অপরিসীম গুরুত্ব বিবেচনায় শ্রমে মর্যাদা দিতে হবে। আজকের বিশ্বের বিপুল অগ্রগতির পেছনে যেমন শ্রমজীবী মানষের অবদান রয়েছে, তেমন শ্রমজীবী সমাজের অসহযােগিতা জীবনকে বিষময় করে তুলবে। বিশ্বের উন্নত দেশগলাের দিকে লক্ষ করলে দেখা যাবে যে, শ্রমের প্রতি তারা মর্যাদাশীল বলে তাদের উন্নতি এত ব্যাপক হয়েছে। সেসব দেশে ছােট বড় বলে কোনোে পার্থক্য নেই। কাজ যাই হােক না কেন তাতে কোনো অমর্যাদা লুকিয়ে থাকে না। কায়িক বা দৈহিক পরিশ্রম সেসব দেশে কখনো কানাে অগৌরব নিয়ে আসে না। তাই সকলেই সব রকম কাজের প্রতি সমান আগ্রহ দেখিয়ে থাকে।
জীবনের সাথে শ্রমের একটা নিবিড় সম্পর্ক বিদ্যমান। মানবরজীবনে শ্রমের এই বিশেষ গুরুত্ব দেখাতে গিয়ে কবি বলেছেন -
"চাষী ক্ষেতে চালাইছে হাল,তাঁতি বসে তাঁত বোনে, জেলে ফেলে জাল,বহদূর প্রসারিত এদের বিচিত্র কর্মভার,তারি পরে ভর দিয়ে চলিতেছে সমস্ত সংসার।"
শ্রমের প্রকারভেদঃ শ্রম প্রধানত দু - প্রকার দৈহিক বা কায়িক শ্রম ও মানসিক শ্রম। মানবসমাজে দু ধরনের শ্রমেরই মূল্য আছে। যারা দেহ খাটিয়ে পরিশ্রম করে, তাদের শ্রমকে দৈহিক বা কায়িক শ্রম বলে। আর যে শ্রমে বুদ্ধিমত্তা ও চিন্তাভাবনাকে কাজে লাগানাে হয়, তাকে বলে মানসিক শ্রম। জীবন পথে চলতে গেলে উভয় প্রকার শ্রমেরই প্রয়ােজন রয়েছে।
ভাগ্যরচনা ও প্রতিভা বিকাশে শ্রম: মানুষ একদিকে যেমন সভ্যতার স্রষ্টা, অন্যদিকে তেমনি নিজের ভাগ্যেরও নির্মাতা। নিজের ভাগ্যকে মানুষ নিজেই নির্মাণ করতে পারে। তার ভাগ্য নির্মাণের হাতিয়ার হলো তার পরিশ্রম। প্রত্যেক মানুষের মধ্যেই আছে সুপ্ত প্রতিভা। পথিবীতে যে সকল ব্যক্তি প্রতিভাবান বলে স্মরনীয় ও বরণীয় হয়ে আছেন, তাঁরা আজীবন করেছেন কঠোর পরিশ্রম এবং তার ফলে তাঁদের প্রতিভা ফুলের মতো বিকশিত হয়ে পৃথিবীকে বিতরণ করেছে অনাবিল সৌরভ। পরিশ্রমই মানুষের প্রতিভা বিকাশ ও ভাগ্য গঠনের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। শ্রমের এই গুরুত্ব বিবেচনা করেই পাশ্চাত্য মনীষী Virgil বলেছেন,
"The digniy of labour makes a man self-confident and high ambitious So, the evaluation of labour is essential."
শ্রমিক লাঞ্ছনা: সমাজের উচ্চ স্তরের মানুষ যারা, তারা গ্রহণ করেছে সমাজের সম্মানের কাজ, গৌরবের কাজ। সমাজের সমস্ত সুখ সুবিধা নিজেরা কুক্ষিগত করে তথাকথিত নিম্নশ্রেণির মানুষদের নিক্ষেপ করেছে ঘৃণা ও বঞ্ছনার নীরন্ধ্র অন্ধকারে। অথচ সেই শ্রমিকেরা চিরকাল মাঠে মাঠে বীজ বুনেছে, ফলিয়েছে সােনার ফসল, তাতি বসে তাত বুনেছে, জেলে ধরেছে মাছ। অথচ স্বার্থপর সমাজের কাছ থেকে তারাই পায় নি মানুষের মর্যাদা।
সকল ধর্মে শ্রমের মর্যাদা : সকল ধর্মেই শ্রমের মর্যাদাকে গুরুত্ব দেয়া হয়ছে। ইসলাম ধর্মে শ্রমের এ শ্রমিকের দেওয়া হয়ছে। শ্রমের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে ও শ্রমিকদের ঘাম শুকানাের আগেই তার পারিশ্রমিক দেওয়ার নিদেশ দেওয়া হয়েছে। হিন্দু ও বৌদ্ধধর্মে কর্মবাদের কথা অর্থাৎ পরিশ্রমের মাধ্যমে সং উপার্জনের কথা বলা হয়ছে। খ্রিষ্টধর্মে শ্রমহীন বেকার মানুষের মর্যাদা নেই। অন্যান্য ধর্মেও পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজের অবস্থার পরিবর্তন অর্থাৎ উন্নতি করার কথা বলা হয়ছে। শ্রমের প্রকারভেদ বড় কথা নয়। যে কোনাে শ্রমেরই গুরুত্ব ও মর্যাদা সমান।
শ্রমের জয় : শ্রমিক সমাজ আজ বহু সংগ্রামের মধ্য দিয়ে মানবিক শ্রমকে তার যোগ্য মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছে। কালের যাত্রায় একমাত্র তারাই আজ সমাজের রথকে গতি দিতে পারে, একমাত্র তারাই পারে সমাজে কর্মমুখরতার ঢেউ আনতে। তাই আজ শ্রমের জয় বিঘােষিত হচ্ছে দিকে দিকে। শ্রমিক দুনিয়ার প্রতি সকলের দৃষ্টি আজ আকৃষ্ট হয়েছে। দেশে দেশে আজ শ্রমিক সংঘ এবং শ্রমিক কল্যাণ স্বীকৃতি লাভ করেছে। সমাজ কাব্যে উপেক্ষিত এই শ্রমকে তার যোগ্য সম্মান না দিলে যে সমাজের উণ্থান নেই, অগ্রগতি নেই - এ কথা আজ সারা বিশ্বে স্বীকৃত লাভ করেছে।
বাংলাদেশে শ্রমের স্থানঃ বাংলাদেশে শ্রমবিভাগ ছিল প্রধানত বর্ণগত। যারা উচ বর্ণের তারা কোন কাজ করত না নিচ বর্ণের লােকেরা দৈহিক বা কায়িক পরিশ্রমের কাজ করত। তাতে সমাজে একটা ধারণা জন্মেছিল যে, যারা শারীরিক পরিশ্রম করে তার সমাজে সম্মানের পাত্র নয়। এভাবে কায়িক পরিশ্রম আমাদের দেশে অবজ্ঞা পায় এবং আমরা কর্মবিমুখ হয়ে পড়ি। এটাই আমাদের অবনতির মূল কারণ।
শ্রমের সুফল : পরিশ্রম ছাড়া সমাজের কোনাে কাজই সম্পাদিত হতে পারে না। সমস্ত কাজই পৃথিবীর কাজ। পৃথিবীতে যে জাতি যত বেশি পরিশ্রমী, সে জাতি ও দেশ তত উন্নত। পৃথিবীর মানুষ হিসেবে সকল কাজই মানুষের করণীয়। তাতে যেমন কাজের কোনো জাতিভেদ নেই, যারা সেই কাজ করে তাদেরও কোনো জাতিভেদ নেই। সুতরাং পরিশ্রম করা মােটেই সম্মান হানিকর নয়। এতে ব্যক্তির আত্মােন্নয়ন যেমন হয়, তেমনি হয় দেশের কল্যাণ। কায়িক ও মানসিক উভয় প্রকার শ্রমের মাধ্যমেই ব্যক্তি এবং জাতি মাথা উচ্চ করে চলতে পারে। জাতীয় উন্নয়নে শ্রমের গুরুত্ব অনেক। শ্রমবিমুখ জাতির পতন অনিবার্য। জগতের মহামনীষীরা সকলেই পরিশ্রম করেছেন এবং শ্রমের মর্যাদা দিয়ে গেছেন। জগতের এত যে কীর্তি স্থাপিত হয়েছে তার মূলে রয়েছে মানুষের চিন্তা, পরিশ্রম ও অধ্যবসায়। শ্রমকে ঘৃণার চোখে বিচার করলে দেশে উৎপাদনের জোয়ার আনা যায় না, জাতীয় সমৃদ্ধির স্বপ্প রচনা করা যায় না। শ্রমের মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হলেই পরিশ্রমের প্রকৃত সুফল পাওয়া সম্ভব। তাই সকল প্রকার শ্রমেরই মর্যাদা নিশ্চিত হওয়া প্রয়ােজন তাহলে যারা শ্রম দেয় তারা আর শ্রমবিমুখ থাকবে না এবং দেশের উন্নয়ন ত্বরান্মিত হবে।
উপসংহার : জীবনের সর্বক্ষেত্রে শ্রমের গুরুত্ব অপরিসীম। মানুষের পরিশ্রমকে কোনাে সমাজ কোনো কালেই তার যোগ্য মর্যাদা দেয়নি। যারা সত্যিকার অর্থেই জীবনে সম্মান পেয়েছেন তারা একবাক্য স্বীকার করেছেন যে, পরিশ্রমেই জীবনের প্রকৃত আনন্দ। পরিশ্রমই জীবনের অশেষ দুঃখ-কষ্ট হতে মানুষকে মুক্তির সন্ধান দেয়। তাই সকল-প্রকার শ্রমের মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হওয়া প্রয়োজন।
শ্রমের মর্যাদা ২৫ পয়েন্ট, অথবা শ্রমের মর্যাদা ২০ পয়েন্ট এমন অনেক লিখা যাবে। তবে আমার মনে হয়না শ্রমের মর্যাদা ২৫ পয়েন্ট পড়তে হবে। এখানে প্রায় ১হাজার শব্দের শ্রমের মর্যাদা রচনা এটি। এটি পড়লে আপনার মধ্যে অনেকটাই ধারণা চলে আসবে। তারপরও যদি শ্রমের মর্যাদা ২৫ পয়েন্ট লিখতে চান বা পড়তে চান তা হলে অন্য সাইট গুলো থেকেও পড়তে পারেন।
উক্ত রচনাটি বাংলাদেশের অন্যতম পাবলিকেশন লেকচার থেকে নেওয়া।
আপনি চাইলে তাদের 👉 ফেসবুক পেজ 👈 থেকে বইটি কিনতে পারেন। ধন্যবাদ 💚
ভালো লাগলে শেয়ার করুন।